“কল্পিত স্বর্গে কল্পিত সুখ আছে কিনা জানা নেই, জানবার উপায়ও নেই। তাই, প্রত্যক্ষ সুখ ছেড়ে, বিকল্প সুখের সন্ধানে দু’হাত তুলে ছোটা-এক রকম অসুখেরই লক্ষণ।” - অতীশ রায়।
মৃত্যুর কোন ব্যাখ্যা হয় বলে আমার ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয় না। যে যাই বলুক সবই তাদের অর্জিত ধারণার ফলশ্রুতি মাত্র তার বেশি কিছু নয়। ইনি বলেছেন, তিনি বলেছেন বলে, তার কথাগুলোই চিরসত্য এ’রকম ধরে নেওয়ার কোন কারণ আছে বলে আমার মনে হয় না। আর কিছু দিন অপেক্ষা কর, আমি নিজে তার স্বাদ গ্রহণ করি তারপর আসল সত্যটা তোমাদের কাছে তুলে ধরব। হা হা হা হা ...
জীবিত কোন লোকই মৃত্যু সম্পর্কে কিছু বলতে পারে না, যা বলে তা তার উর্বর মস্তিস্কের কল্পনা কিংবা জীবনের অর্জিত জ্ঞানের ঝাপসা ধারণা মাত্র। আমরা সকলেই জাতকের কথা শুনি, কিন্তু কোন জাতকের পূর্ণাঙ্গ জীবনের কথা জানি না। সেটুকুই আমাদের নির্বাচিত করে জানানো হয়, যাতে আমাদের বিস্ময় আর কৌতূহল বজায় থাকে। আমার তো মনে হয়.......
“ মৃত্যুই শেষ কথা
তারপর কিছু নেই আর
এই কথা বলে এক সেয়ানা পাগল
করে দিয়ে গেল সব হিসাবের গোল
যতদিন বেঁচে আছ পৃথিবী তোমার
তারপরে কিছু স্মৃতি থাকে শুধু
আর কিছু থাকে নাকি তার?
তাই এত জীবনের কথা বলা
কবিতায় গানে বারবার।
বেঁচে থাকে যারা
তারাই তো জীবনের গান গাইতে পারে
শব তা পারে না
অবশ্য সে কারও ধারও ধারে না
জীবনের মতো সে তো বাধ্য নয় কারও
মৃত্যুর পরে শুধু
থেকে যায় কিছু স্মৃতি তারও
সব স্মৃতি
মনে ধরে রাখা যায় নাতো কারও
কিছু স্মৃতি থাকে জাগরুক
মাঝে মাঝে মনে পড়ে
মনে পড়ে বার বারও।”
- কবিতা মিত্র।
পূনর্জন্ম আছে বলে, মানুষ বিশ্বাস করে, মনে মনে শান্তি পায়, তাই সে বিশ্বাস করতে শুরু করে গীতার সেই বহুল প্রচলিত অমোঘ বাণী,
“ বাংসাসি জীর্ণানি যথা বিহায়,
নবানি গৃহ্নাতি নরোহপরাণি
তথা শরীরণি বিহায় জীর্ণান্যন্যানি
সংযাতি নবানি দেহী। (গীতা - ২/২২.)
আত্মার মৃতূু হয় না, সে শুধু পুরনো খোলস বদলে অন্য খোলোশ ধারণ করে। এটা বিশ্বাস করতে তার ভাল লাগে, তার মন সায় দেয়। তার চেয়ে বেশি কিছু নয়। পরলোকে কি আছে বা নেই, তা নিয়ে পরমায়ু ক্ষয়ের চেয়ে, ইহলোকে কি করে পরমায়ু অবক্ষয়ের থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, সে ভাবনা অনেক বেশী ফলপ্রসূ।
মানুষের যদি পূনর্জন্ম থাকত, তবে যতগুলো মৃত্যু ততগুলি আত্মারই পূনর্জন্ম প্রাপ্তি ঘটা স্বাভাবিক, তার বেশি সম্ভব নয়,তবে ভারতের তেত্রিশ কোটি জনগণ কিভাবে একশ’তেত্রিশ কোটি হলো?
এই হিসেবটা কেউ আমায় বুঝিয়ে দিলে, আমি স্বস্তি পাব।
অনেকে হয়তো এর উত্তরে অযৌক্তিক যুক্তি দেখাতে চাইবেন, অন্যান্য প্রাণীরা মৃত্যুর পরে, পূণ্যফলে মানব আত্মা ধারণ করেন, সেটা মোটেই বিশ্বাস যোগ্য যুক্তি বলে মনে হয় না আমার।